সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক::উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আকাশপথের যাত্রীদের সুবিধার্থে প্রথমবারের মতো সেলফ চেক-ইন ব্যবস্থা চালু হতে যাচ্ছে। বেসরকারি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এই সার্ভিস চালুর ঘোষণা দিয়েছে। একইসঙ্গে শিগগিরই মধ্যপ্রাচ্যের পাঁচ গন্তব্যে ফ্লাইটেরও পরিকল্পনা করেছে ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ। আর ২০২৩ সালে ঢাকা- নিউইয়র্কে রুটে ফ্লাইট চালানোর চিন্তা আছে ইউএস-বাংলার।
সোমবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম। তিনি জানান, চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে বিমানবন্দরে এই সেবা চালু করবে তারা।
কামরুল ইসলাম বলেন, আধুনিক বিশ্বের এয়ারলাইন্সগুলোতে সেলফ চেক-ইন করার ব্যবস্থা রয়েছে। আমাদের দেশে সেলফ চেক-ইনের কোনো সুযোগ নেই। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স শিগগিরই বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সেলফ চেক-ইন এর ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে, যা ইউএস-বাংলার এগিয়ে যাওয়ার নিদর্শন।
এই কর্মকর্তা বলেন, ইউএস-বাংলা তাদের ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লায়ারদের জন্য ঢাকায় আলাদা চেক-ইন কাউন্টারের ব্যবস্থা করেছে। ভবিষ্যতে প্রত্যেকটি বিমানবন্দরে স্কাইস্টার গ্রাহকদের জন্য আলাদা চেক-ইন কাউন্টার করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচলে ইউএস-বাংলার পরিধি তুলে ধরে কামরুল ইসলাম বলেন, দেশে ক্রস কান্ট্রি ধারণা থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যশোর থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং উত্তরবঙ্গের একমাত্র সচল বিমানবন্দর সৈয়দপুর থেকে চট্টগ্রামে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। শিগগিরই সৈয়দপুর থেকে কক্সবাজার, সিলেট থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার রুটেও ফ্লাইট শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। এসব ফ্লাইটের কারণে যাত্রীদের সময় ও অর্থ দুটিই সাশ্রয় হবে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটকে আরো বেশী শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নতুন রুট ও ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ানোর পরিকল্পনার সঙ্গে চলতি বছরের শেষে এবং আগামী বছরের শুরুতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজের বহরে আরও তিনটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও ৪টি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট বহরে যোগ করতে যাচ্ছে।
করোনাকালে ইউএস-বাংলার কার্যক্রম তুলে ধরে কামরুল ইসলাম বলেন, বিশ্বের অনেক বিখ্যাত এয়ারলাইন্স কোভিড-১৯ এর সময় এয়ারলাইন্সকে টিকিয়ে রাখার জন্য কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছে, বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে। কিন্তু ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স কর্মীদের নিজের পরিবারে রেখে দেওয়ার মানসিকতা দেখিয়েছে। সব কর্মীকে বিনামূল্যে কোভিড-১৯ টেস্ট করতে সহযোগিতা করেছে। সেলফ চেক-ইন কি বিমানবন্দরের চেক-ইন কাউন্টারে লাইনে না দাঁড়িয়েই স্বয়ংক্রিয় মেশিনে টিকিটের তথ্য দিয়ে বোর্ডিং পাস নেওয়া, আসন বেছে নেওয়া, লাগেজ জমা দেওয়া ইত্যাদি কাজগুলো সেরে নেওয়া যাবে সেলফ চেক-ইনে। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের উন্নত দেশ ও এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের এয়ারলাইন্সগুলো গ্রাহকদের জন্য সেলফ চেক-ইন ব্যবস্থা রেখেছে। করোনাকালে কারো সংস্পর্শে না এসে চেক-ইন করার এই সেবা অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। গ্রাহকরা ফ্লাইটের নির্দিষ্ট সময় আগে অ্যাপে অথবা বিমানবন্দরে এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানের ল্যাপটপের মাধ্যমে সেলফ চেক-ইন করতে পারবেন। সেলফ চেক-ইন করার জন্য একজন যাত্রীকে তার নাম, পাসপোর্ট এবং টিকিটের নম্বর মেশিনে ইনপুট দিতে হবে। এরপর যাত্রী নিজেই নিজের আসন বেছে নেবেন। সবকিছু ঠিক থাকলে যাত্রীর বোর্ডিং পাস স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রিন্ট হয়ে যাবে। এরপর লাগেজ জমা দিয়ে ইমিগ্রেশন করতে পারবেন যাত্রী।
২০২২ সালে জেদ্দা, দাম্মাম, মদিনা, রিয়াদ, আবুধাবিতে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়েছে ইউ-এস বাংলা। এছাড়া আগামী বছরের মধ্যে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন ক্যাটাগরি-ওয়ান অর্জন করতে পারলে ২০২৩ সালের মধ্যে ঢাকা-নিউইয়র্কে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনাও করেছে সংস্থাটি।
সংবাদ সম্মেলনে কামরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এয়ার বাবল চুক্তির অধীনে আমরা ঢাকা থেকে কলকাতা ও চেন্নাই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছি। এরই মধ্যে কলকাতা, চেন্নাই ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের গন্তব্য দুবাই, দোহা, মাসকাট, এশিয়ার অন্যতম গন্তব্য সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর, চীনের গুয়াংজুতে স্বল্প পরিসরে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা। আশা করছি, খুব শিগগিরই ব্যাংকক রুটেও ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করবে।
এবিএ/০৪